কিডনি: মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ এবং তার সঠিক যত্ন
কিডনি মানবদেহের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ ও অপ্রয়োজনীয় জল ফিল্টার করে শরীরের জল ও খনিজ পদার্থের ভারসাম্য রক্ষা করে। কিডনির সঠিক কার্যক্রম আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর সঠিক যত্ন না নিলে কিডনির বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় যা দেহের অন্যান্য অঙ্গকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

কিডনির অবস্থান ও গঠন
মানবদেহে দুটি কিডনি থাকে, যা পিঠের নিচের দিকে, মেরুদণ্ডের দু’পাশে অবস্থিত। এই অঙ্গগুলি প্রায় মুষ্টির আকারের, এবং এর রঙ লালচে বাদামী। কিডনি দেখতে মটরশুটি আকৃতির এবং প্রতি কিডনিতে প্রায় এক মিলিয়ন নেফ্রন থাকে। নেফ্রন হচ্ছে কিডনির মূল কাঠামো, যার মাধ্যমে রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ ফিল্টার হয়ে মূত্র তৈরি হয়।
কিডনির গুরুত্বপূর্ণ কার্যকারিতা

কিডনি মূলত শরীরের বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত জল ফিল্টার করে মূত্র তৈরি করে। এছাড়া কিডনি আমাদের শরীরের জল, ইলেকট্রোলাইট এবং অ্যাসিড-বেসের ভারসাম্য রক্ষা করে। দেহের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন যেমন ইরিথ্রোপোইটিন কিডনিতে উৎপন্ন হয়, যা রক্তে লোহিত কণিকার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে।
কিডনি রোগের কারণ ও ঝুঁকি
কিডনি রোগ সাধারণত দুটি ভাগে বিভক্ত: ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (CKD) এবং একিউট কিডনি ইনজুরি (AKI)। CKD ধীরে ধীরে কিডনির কার্যক্ষমতা হারায়, এবং AKI হঠাৎ করে কিডনি কার্যক্ষমতা হারায়। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ CKD এর প্রধান কারণ। এছাড়া, অতিরিক্ত লবণ, অপর্যাপ্ত জলপান, এবং ধূমপানের কারণে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
কিডনি রোগের লক্ষণ
কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলি খুব স্পষ্ট নয়। প্রাথমিক অবস্থায় লক্ষণগুলি প্রায়ই অপ্রকাশিত থাকে, ফলে কিডনি সমস্যার প্রকৃত কারণ বোঝা কঠিন হয়ে যায়। তবে কিডনি সমস্যার কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে:
- মূত্রের পরিমাণ ও রঙের পরিবর্তন
- মুখ, হাত, পা ফুলে যাওয়া
- দুর্বলতা ও ক্লান্তি
- অতিরিক্ত তৃষ্ণা ও শুষ্কতা অনুভব করা
- রাতে ঘুমের সমস্যা ও ঘন ঘন মূত্রত্যাগের প্রয়োজন অনুভব করা
কিডনি রোগ প্রতিরোধের উপায়
কিডনি সুস্থ রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম কিডনির জন্য উপকারী। কিডনি রোগ প্রতিরোধের জন্য কিছু কার্যকর উপায় নিম্নরূপ:
১. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা
বছরে একবার কিডনি ফাংশন টেস্ট করা উচিত। কিডনি সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ দ্রুত শনাক্ত করে সঠিক চিকিৎসা নিলে কিডনির ক্ষতি রোধ করা সম্ভব।
২. পরিমিত লবণ ও চিনি গ্রহণ
লবণ ও চিনির অতিরিক্ত ব্যবহার কিডনির ক্ষতি করে। খাদ্যে লবণ ও চিনি কম ব্যবহার করা এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা কিডনি রোগের ঝুঁকি কমায়।
৩. পর্যাপ্ত পরিমাণ জল পান
জল কিডনি সুস্থ রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দৈনিক ৮-১০ গ্লাস জল পান করলে কিডনি রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ সহজে ফিল্টার করতে পারে এবং মূত্র তৈরির মাধ্যমে বর্জ্য বের করে দেয়।
৪. ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকা
ধূমপান এবং অ্যালকোহল কিডনির ক্ষতি করে। ধূমপান রক্তচাপ বৃদ্ধি করে এবং কিডনির ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ায়।
৫. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
সবজি, ফলমূল, শাকসবজি, মাছ এবং লো ফ্যাটযুক্ত খাবার কিডনির জন্য উপকারী। তাজা শাকসবজি ও ফলমূলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা কিডনির কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়ক।

Related Posts
You may want to read this post :
- Detailing Of Cefuroxim Clavulanic Acid
- Detailing Of Azithromycin 2022
- Detailing Of Montelukast
- Detailing Of Cefixim
- Antacid Preparetion Detailing.
- Anti Ulcerent এর Detailing
- Cell বা কোষ
- বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক এর মুড ওফ অ্যাকশন
- এন্ডোক্রাইন সিস্টেম
- Elementary/Urinary system বা মূত্রতন্ত্র
- সার্কুলেটরি বা কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম।
Rate This Article
Thanks for reading: কিডনি: গঠন, কার্যকারিতা, রোগের কারণ ও প্রতিরোধে করণীয়, Sorry, my English is bad:)